August 2, 2025, 5:27 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা

কোরবানীর ঈদের মাংস কাটার কাঠের কাইটের কদর এখনও আগের মতোই

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
পালিত হচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানী। আর এই কোরবানীর পশু জবাইয়ের পর মাংস প্রক্রিয়াকরণের কয়েকটি খুবই প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই মাংস কেটে টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত এই কাঠের পাটাতনটি।
সারা বছর কসাইখানাতে এটির ব্যবহার খুবই সাধারণ হলেও জিনিসটি অসাধারণ চাহিদায় এসে ধরা দেয় ঈদুল আজহার এইদিনে। ঈদে সারাদেশের আনাচে-কানাচে এই জিনিসটির কদর বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাওয়া লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই কদর বেড়ে যাওয়ার কারন হলো এদিন লক্ষ লক্ষ পশু কোরবানী দেয়া হয় যা শহর থেকে প্রান্তর পর্যন্ত বিসৃÍত। এই বিপুল পশু প্রক্রিয়াকরণ করতে প্রচুর পরিমাণ কাঠের গুড়ি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
একটি গরু প্রসেস করতে প্রায় দুই থেকে তিনটি গুড়ির প্রয়োজন হয়ে থাকে। একটি ছাগল প্রসেসে অবশ্য একটিই যথেষ্ট।
সাধারণত এলাকার স’ মিল (কাঠ চেরাই মিল/করাতকল) গুলোতে গাছের গুঁড়ি করাতে ফেলে ছোট ছোট গোল আকৃতির টুকরা তৈরি করে এটি বানানো হয়। এলাকাভেদে এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। কোন এলাকায় এটাকে বলে খাইট্রা, খটিয়া, কাইটে,গুড়ি, শপার, হাইজ্যা প্রভৃতি।
এই গুড়ি ব্যবসায়ী ও স’মিলের মালিকরা জানান মাংস কাটার কাজে কাঠের এই গুড়ির কোন বিকল্প নেই। যে ডাঁশা/চাপাতি দিয়ে মাংস কাটা হয় সেটা এই গুড়ি ছাড়া অসম্ভব। তবে তারা জানান এই গুড়ি তৈরিতে বিশেষ সর্তক থাকতে হয়। কাঠের ব্যবহারও নির্দ্দিষ্ট হতে হবে।
কুষ্টিয়া শহরের চাঁদাগাড়ি এলাকার ভাই ভাই স’মিলের মালিক আজিবর রহমান জানান তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়েই এই খাইট্টা বানাতে হয়। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তেতুল কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসবে না। তাই কাঠের গুঁড়াও উঠবে না। ফলে মাংস নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
আজিবর জানান তার স’ মিলে সারাবছরই এই গুড়ি তৈরি করা হয়। পেশাদার কসাইরা তার কাছ থেকে গুড়ি নিয়ে থাকে। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে তার স’সিলে তিনি প্রায় ৫০০’র বেশী গুড়ি তৈরি করেন। প্রায় পুরো শহরের চাহিদা তিনিই মেটান।
এবারে প্রতিটি সাধারণ মানের গুড়ি বিক্রয় হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। এর সাথে আরও আছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার প্রসেসিং চার্জ। তবে তারপরও গুড়ির ওজনের উপর এই দাম নির্ভর করে। বড় মানের পেশাদার গুড়ির দাম প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত।
শহরের আশেপাশের আরো কয়েকটি স’মিলে এই গুড়ি তৈরি হচ্ছে। শহরের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার রিক্তা স’ মিলের মালিক উজের আলী জানান শহরের বড় বাজার, মিউনিসিপ্যালিটির বাজারে তার স’মিলের গুড়ি পাওয়া যাচ্ছে। তিনি প্রায় ৩০০ গুড়ি তৈরি করেছেন। তিনি প্রায় ২০০ বিক্রি করে ফেলেছেন।
পেশায় আইনজীবি কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার শাহরিয়ার সিদ্দিকী সৌম কাঠের গুড়ি কিনতে এসেছেন ভাই ভাই স’মিলে। তিনি জানান এবার গুড়ির দাম দিগুণ হয়েছে। গতবার যে গুড়ি কেনা হয়েছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় একার সেটা ৬৫০ টাকা হয়েছে।
তিনি জানান তার একটি গরু কোরবানী রয়েছে তিনি দুটি কাঠের গুড়ি ক্রয় করেছেন।
গ্রামের দিকে এই গরু প্রসেসিংটা সর্বাংশে প্রায় অপেশাদার প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়ে থাকে। অনেক সাধারণ মানুষ এদিনে এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে থাকে। গ্রামে অনেক সময় দলগতভাবে কোরবানী হয়ে থাকে। সেখানে সমাজ ভিত্তিকও কোরবানী হয়। সেখানে মাংস প্রকিয়াকরণ হয় তাদের মতো করে। সবার অংশগ্রহনে। তবে সেখানে গ্রামের সাধারণ মানুষও অংশ নিয়ে থাকে।
তবে পেশাদার একটি গ্রæপও এই প্রক্রিয়ার সাথে এদিন যুক্ত হন। এটি সাধারণত শহর এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়।
এমন একজন রমিজ মোল্লা। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁধবাজার এলাকায়। তিনি চার জনের একটি দল করেছেন। তিনি এসেছেন কাঠের গুড়ি কিনতে ঐ ভাই ভাই ম’মিলে। রমিজ জানান। এ কাজে তারা তাদের নিজস্ব কাঠের গুড়ি ব্যবহার করে থাকেন। গরুর মালিকরা অনেক সময় গুড়ি সরবরাহ করে থাকেন তাতে ভাল কাজ হয়না। তিনি ১৫০০ টাকা দিয়ে ভারী ওজনের গুড়ি কিনলেন।
তিনি জানান একটি গরু প্রসেস করে তিনি ৪৫০০ টাকা থেকে ৫৫৫৫ টাকা পর্যন্ত নিবেন। ইতোমধ্যে দুটি গরু প্রসেসের তিনি ঠিকা নিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net